বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।
শিরোনাম :

সিএসডিএফ এর উদ্যোগে অনলাইন আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ভয়েস প্রতিবেদক:

চিটাগাং সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট ফোরাম(সিএসডিএফ) ও আমেরিকান কর্নার চট্টগ্রামের উদ্যোগে করোনা সংকটঃ চট্টগ্রামে করোনা মহামারীচলাকালীন সময়ে পারিবারিক সহিংষতা অনলাইন আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিএসডিএফ’র চেয়ারপার্সন এস এম নাজে হোসাইসনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অনলাইন সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকার স্টেপস এর প্রোগ্রাম কোঅরডিনেটর চন্দন লাহড়ী। আলোচনায় অংশনেন ইলমার প্রধান নির্বাহী জেসমিন সুলতানা পারু, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর আবিদা আজাদ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট রেহেনা বেগম রানু, কারিতাসের আঞ্চলিক পরিচালক জেমস গোমেজ, বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের পরিচালক অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি অধ্যাপিকা লতিফা কবির, এডাব ঢাকার পরিচালক এ কে এম জসিম উদ্দীন, আনসার ১৫ ব্যাটেলিয়ান, পটিয়ার পরিচালক আজিম উদ্দীন, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি, বিশিষ্ঠ সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের কাযকরী সদস্য মহর্রম হোসাইন, দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনের স্টাপ রিপোটার চৌধুরী মাহবুব, আনসার ১৫ ব্যাটেলিয়ানের মানবাধিকার উপদেষ্ঠা কানিজ ফাতেমা লিমা, সংসপ্তকের লিটন চৌধুরী, মাইশার প্রধান নির্বাহী ইয়াছিন মঞ্জু, হেলপ ককসবাজারের প্রধান নির্বাহী আবুল কাসেম, নারী নেত্রী নাসিমা শওকত, সুচিত্রা গুহ টুম্পা, নাসরিন আকতার প্রমুখ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আমেরিকান কর্নার চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক রুমা দাস।মূল প্রবন্ধে চন্দন লাহড়ী বলেন স্টেপস এর পক্ষ থেকে সিএসডিএফসহ দেশের ১২টি জেলায় সমীক্ষায় দেখা গেছে করোনাকালীন সময়ে পারিবারিক সহিংষতা অনেকগুন বেড়ে গেছে। আর লকড ডাউনের কারনে নারীরা ঘরের বাইরে যাওয়া কমলেও ঘরে তাদের উপর দায়িত্ব অনেকগুন বেড়ে গেছে।আর অধিকাংশ নারীরা কর্মহীন হবার কারনে তাদের আয় রোজগার কমে যাওয়ায় পরিবারে অনেকেই নিগ্রহের শিকার। আর নারীর আয়-রোজগার কমায় তাদের স্বাস্থ্য ঝুকি বেড়ে গেছে।জেসমিন সুলতানা পারু বলেন করোনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও হয়রানি বেড়ে গেছে।নারীর প্রতি সহিংষতারোধে তরুন জনগোষ্ঠিকে সম্পৃক্ত করার আহবান জানান।একই সাথে সহিংষতা প্রতিরোধে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান গুলোকে আরও সক্রিয় করার পরামর্শ দেন। অ্যাডভোকেট রেহেনা কবির রানু বলেন নারীর অর্থনৈতিক সংকটকের কারনে তাদের উপর সহিংষতা বেড়ে যাচ্ছে। নারীর প্রতি সহিংষতা প্রতিরোধে স্থানীয় বেসরকারী উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারীভাবে তহবিল বরাদ্ধের দাবি করে বলেন, একসময় নারী নির্যাতন ঘটলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতো। এখন এনজিওগুলির তহবিল সংকটের কারনে এ ধরণের কর্মসূচি আয়োজন করা যাচ্ছে না। রাস্ট্রীয় ভাবে এ ধরনের কাজে তহবিল বরাদ্ধ দরকার। কারিতাসের আঞ্চলিক পরিচালক জেমস গোমেজ বলেন করোনায় প্রকৃতপক্ষে কি কি ধরণের সহিংষতা হয়েছে তার পরিসংখ্যান বের করা দরকার। বেসরকারী উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান ও সমাজ পরিবর্তন কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান গুলোর মাঝে সম্পদের বন্টন ও বিনিময় বাড়ানো যেতে পারে। বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের পরিচালক অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান বলেন করোনায় ভুক্তভোগী আইনী সেবা প্রার্থীরা আরও ভোগান্তির শিকার। মামলার প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। আদালতগুলির কার্যক্রম স্বাভাবিক না হলে এই সমস্যা আরও বাড়বে। তাই দ্রুত আদালতের কার্যক্রম স্বাভাবিক হওয়া দরকার। আইন সহায়তা প্রার্থীরা আইনী প্রতিকার পেতে বিলম্ব হলে সহিংষতা আরও বাড়বে। এডাব ঢাকার পরিচালক একেএম জসিম উদ্দীন বলেন বিভিন্ন মিডিয়া ও গবেষনা সংস্থার প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে করোনা কালে নারীর প্রতি সহিংষতা অনেকগুন বেড়েছে। তবে নারীর প্রতি সহিংষতা রোধসহ করোনা মোকাবেলায় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা গুলোকে সরকারের সহযোগী হিসাবে যুক্ত করতে হবে। বেসরকারী সংস্থাগুলো সরকারের সহায়ক ও পুরিপুরক। করোনা মোকাবেলায় অনেকগুলি প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা না থাকায় জনঅংশগ্রহনমুলক কর্মকান্ড কম দেখা যচ্ছে। প্রবীন সাংবাদিক এম নাসিরুল হক নারীর প্রতি সহিংষতা রোধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে আরও ইতিবাচক হিসাবে ব্যবহার করতে হবে। সেক্ষেত্রে যারা সামাজিক যোগেযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে তাদেরকে আরও সক্রিয় ও সচেতন হতে হবে। গণমাধ্যমগুলি নারীর প্রতি সহিংষতার সংবাদ সব সময় গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করে থাকে।
অন্যান্য বক্তারাও করোনা কালীন সময়ে সহিংষতা বন্ধের মুল কারন হিসাবে পরিবারের আয় কমে যাওয়াকে মূল কারন হিসাবে দেখছেন। আর ঘরে বাইরে নারীর কাজের চাপ, আয়ের চাপ, পরিবার সামলানোর মতো কাজের চাপে নারীরা মানষিক ভাবে বিপযস্ত হচ্ছে। তাই স্থানীয় ভাবে কাউন্সেলিং সেবা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। অনলাইন আলোচনা সভায় নির্যাতনের শিকার নারীদেরকে পূর্নবাসন সহায়তা প্রদান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমগুলিতে ইতিবাচক বিষয়গুলো তুলে ধরার জন্য প্রচারনা কর্মসুচি পরিচালনা করতে হবে। তরুন সমাজকে নারীর প্রতি সহিংষতা বন্ধে তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।স্থানীয় সরকারগুলি নারীর প্রতি সহিংষতা বন্ধে অধিক মনযোগী করার ব্যবস্থা নিতে হবে। সহিংষতা বন্ধে সরকারী হেলপলাইন ৯৯৯ ও ৩৩৩কে আরও জনপ্রিয় করতে হবে।সহজ শর্তে নারীদেরকে ঋন প্রদান, সরকারী-বেসরকারী প্রণোদনা দিয়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তোদেরকে আত্মনির্ভর করা যায় সে বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। করোনা মোকাবেলাসহ নারীর প্রতি সহিংষতা বন্ধে সরকারী উদ্যোগে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে অধিক হারে যুক্ত করতে হবে এবং তাদের জন্য তহবিল বরাদ্দ করার দাবি জানানো হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION